আনলিমিটেড নিউজ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে গ্রামাঞ্চলের ধান কাটা শুরু হয়েছে। সোনালী ধানের ফলন হওয়ায় অনেকটাই খুশি প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকেরা। তাদের দাবি সারসহ আনুসাঙ্গিক কৃষি পণ্যের দাম কমানো হলে ধান-চালের ন্যায্য মূল্য পাবে কৃষক। এতে করে অনাবাদি জমি গুলো সোনালী ধানের আভায় ভরিয়ে তুলবেন তারা।
এদিকে কৃষি এবং খাদ্যা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকেরা যেন ধান এবং চালের ন্যায্য মূল্য পায় সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ব্রি-৭৫, ব্রি-৯০ বীনা-৭, বীনা-১৭, বিআর-২২ ও হাইব্রিড জাতিয় ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকায় চোখ ধাঁধানো সোনালী ধানের আভায় ভরে উঠেছে কৃষকের প্রতিটি ধানের ফসলি মাঠ। উৎপাদন ভালো হওয়ায় খুশি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা।
তারা জানান, জমিতে সার, কীটনাশক, নিরানী, মই দেওয়াসহ সর্বশেষ ফসল কাটতে গিয়ে তাদের উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়েছে।
কৃষকদের দাবি সার এবং কীটনাশকের দাম কমানো হলে ধানের উৎপাদন খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। এতে ধান-চাল বিক্রি করে কিছুটা হলেও লাভবান হবেন তারা। এছাড়া অনাবাদি জমি গুলোতেও বাড়বে ধানের উৎপাদন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাছাইট গ্রামের কৃষক মো. মাসুদ মিয়া বলেন, এবার জমিতে ধান অনেক ভালো হয়েছে। সারের দাম কমিয়ে চালের দামটা কিছুটা বৃদ্ধি করে দিলে কৃষকেরা অনেকটা লাভবান হতে পারবেন।
মো. কাইয়ুম নামে আরেক কৃষক বলেন, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ার কারণে আমরা কোনো রকম বেঁচে আছি। সার এবং কীটনাশকের দাম একটু কম হলে আমাদের যে অনাবাদি জমিগুলো আছে সেগুলোতে আমরা ধান চাষ করবো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের কৃষক বেশির ভাগই চিকন ধান করে থাকে। চিকন ধানের দাম বরাবরই বেশি থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ৫১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ২০১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এবার আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ৫১০ হেক্টর। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা। যাতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভজনক ফসল করার জন্য আমরা কাজ করছি।
তিনি আরো জানান, এ বছর রোপা আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬৫ কোটি টাকা।
এ দিকে জেলা খাদ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকতা কাউছার সজীব জানান, চলতি আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে সরকার জেলায় ৭টি উপজেলায় কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের কাছ ধান সংগ্রহ করা হবে। এই অ্যাপে আবেদন করতে পারবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। তারপর অনলাইনে লটারির পর কৃষকদের কাছে থেকে ৩০টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৯৯৪ মেট্রিক টন ধান এবং ৪৪ টাকা কেজি দরে ১৯ হাজার ১২৩ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হবে। এতে কৃষকেরা অনেকটাই লাভবান হবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।