• রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা রাখে: প্রধান উপদেষ্টা বরিশালের সাবেক এমপি জেবুন্নেসা আফরোজ ঢাকায় গ্রেপ্তার ৯ মাসে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর ৩৮ হামলা, নিহত ২ আ’লীগের যারা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য তারা বিএনপিতে যোগ দিতে পারবেন : আমির খসরু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে পেরোল চুক্তি প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্সের আমরা ৯০ হাজার জীবন হারিয়েছি ক্ষতি ১৫০ বিলিয়ন ডলার: শাহবাজ শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড বাড্ডায় গ্যাস লিকেজে একই পরিবারের শিশুসহ দগ্ধ ৫ বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

জুমার দিনের বিশেষ যে পাঁচটি আমল

Un24admin
আপডেটঃ : শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫

আনলিমিটেড নিউজ ডেস্কঃঃ বিশ্ব মুসলিমের জন্য শুক্রবারকে বলা সাপ্তাহিক হজের দিন। বিশেষ করে গরিব মানুষদের জন্য, যারা টাকাপয়সা খরচা করে সৌদি আরব যেতে পারেন না হজ করতে। এই দিনের ফজিলত এবং গুরুত্ব সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি।

শুক্রবার বেশিরভাগ মুসল্লি শুধু জুমার নামাজটাই আদায় করেন। কিন্তু এদিনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে। হাদিসের ভাষায়, এসব আমলও সর্বোত্তম ইবাদত। কোরআন-সুন্নাহতে যেভাবে দিনটি অতিবাহিত ও আমলগুলো পালন করার দিকনির্দেশনা এসেছে সেভাবে যথাযথভাবে ইবাদতগুলো আদায় করা জরুরি।

চলুন তবে দেরি না করে জেনে আসি তেমনই পাঁচটি আমল সম্পর্কে, যেগুলো জুমার দিনে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অবশ্যই করণীয়।

গোসল করা

জুমার দিন উত্তমভাবে গোসল করা। কারণ নবীজি (স.) এই দিনের গোসলের ব্যাপারে জোর তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে- হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে প্রত্যেক সাবালকের জন্য গোসল করা ওয়াজিব।’ (বুখারি)

জুমার নামাজ পড়া

এ দিনের প্রধান কাজ হলো- ‘জুমার নামাজ পড়া।’ তাই নামাজের জন্য আহ্বান করার সঙ্গে সঙ্গে আগে আগে মসজিদে গিয়ে উপস্থিত হওয়া। কেননা কোরআনে পাকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমুআর দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের জন্য দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সুরা জুমআ: আয়াত ৯)

বেশি বেশি দোয়া করা

জুমার নামাজের আগে ও পরে বেশি বেশি দোয়া করা। কারণ এদিন দোয়া কবুল হয়। তাছাড়া নামাজ পড়ার পর উত্তম রিজিক অনুসন্ধানে বের হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। তিনি বলেছেন-

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ ابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰهِ وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

‘এরপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাকে বেশি বেশি স্মরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকার) সন্ধানে জমিনে ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায়; এদিন বেশি বেশি দোয়া করা আল্লাহর নির্দেশ এবং ইবাদত। যার মাধ্যমে জুমার নামাজ পড়া ব্যক্তির জন্য রয়েছে কল্যাণ, অনুগ্রহ এবং দোয়া কবুলের সর্বোত্তম সম্ভবানা ও সুযোগ।

সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা

জুমার দিন তথা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুমার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত বিশেষ একটি আমল। এ আমল বলতে সুরা কাহফের তেলাওয়াতকে বোঝায়। এ সুরার তেলাওয়াত বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ইবাদত।

সুরা কাহফ কোরআনুল কারিমের ১৫তম পারার ১৮নং সুরা। সম্পূর্ণ সুরাটি তেলাওয়াত করতে না পারলেও প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত হলেও তেলাওয়াত করা উত্তম। আর তাতে মিলবে গুরুত্বপূর্ণ সব ফজিলত। হাদিসে এসেছে-

> যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর (পরবর্তী) জুমা পর্যন্ত নূর হবে।

> যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্ব ধরনের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও মুক্ত থাকবে।

> এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব (কবিরা গোনাহ ব্যতিত) গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।

বেশি বেশি দুরূদ পড়া

জুমার দিন তথা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুমার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত বেশি দুরূদ পাঠ করা উত্তম। যদি কোনো ব্যক্তি একবার দুরূদ পড়ে তবে তার প্রতি ১০বার রহমত নাজিল করা হয়। তবে জুমার দিন আসরের নামাজের পর দুরূদ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

হজরত আউস ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের সর্বোত্তম দিনগুলোর একটি হলো জুমার দিন; এদিন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিন তার মৃত্যু হয়েছে। এদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। আর এদিনই (শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার ফলে) সবাই অচেতন হয়ে পড়বে।

সুতরাং এদিন তোমরা বেশি করে আমার জন্য দুরূদ পাঠ কর। কারণ, তোমাদের দুরূদ আমার কাছে পেশ করা হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করন, (মৃত্যুর পর) আপনার দেহ শেষ হয়ে যাবে? তখন কীভাবে আমাদের দুরূদ পাঠ আপনার কাছে পেশ করা হবে?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘নবীদের দেহ ভক্ষণ করা আল্লাহ তাআলা মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুরুদ শরিফ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করবেন।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার দিনটি বিশেষ আমল ও ইবাদতে নিমগ্ন থাকা। কোরআন সুন্নাহর ওপর যথাযথ আমল করা। যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায় করা। জুমার দিনটি কোরআন তেলাওয়াত, দুরূদ ও দোয়ার আমলে অতিবাহিত করা। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দিন (আমিন)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ