আনলিমিটেড নিউজঃ সিপিডি’র সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত রিপোর্ট সম্পর্কে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারা কোনো গবেষণা করেনি। কিছু পত্রিকার কাটিং জোগাড় করে একটা রিপোর্ট তৈরি করে সেই আলোকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।
সোমবার চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর দেওয়া তথ্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে যদিও বা গবেষণার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে গবেষণা করতে অনেক সময় লাগে, অনেক তথ্য-উপাত্ত থাকে। কিন্তু সিপিডি এই রিপোর্ট তৈরি ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনেক লুকোচুরি করেছে এবং ভুল তথ্য তারা পরিবেশন করেছে।
একে একে উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, যেমন সিপিডি বলেছে, আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে বিদেশনির্ভর। আসলে আমাদের চলতি বাজেটের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে সাহায্যনির্ভর কিংবা বিদেশনির্ভর। এক সময় এটি ২০ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ নেয়ার কারণে এটি ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অথচ সিপিডি বলেছে এটি ৭৫ শতাংশ।
সিপিডির তথ্যের অসঙ্গতি তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বলেছে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকা লোন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা এরই মধ্যে আদায় করা হয়েছে এবং বাকি দুই হাজার কোটি টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে, মামলা চলমান, আদায় প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
সিপিডি আরো বলেছে, নাবিল গ্রুপ ২ হাজার ৭’শ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই ঋণ যেসব আদায় হয়েছে, সে তথ্য সিপিডির রিপোর্টে জানানো হয়নি। ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলোকে লুকানো হয়েছে। সিপিডি চট্টগ্রামভিত্তিক একটি গ্রুপের কথা বলেছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চেক করেছি। সেই গ্রুপের কোনো লোনই ক্লাসিফায়েড নয়। অর্থাৎ সিপিডি অসত্য তথ্য দিয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, একইসাথে সিপিডি বলেছে, ক্লাসিফায়েড লোনের আকার বেড়েছে। কিন্তু তারা শুধু আকারের কথা বলেছে, পারসেন্টেজের কথা বলেনি। কারণ, ক্লাসিফায়েড লোনের হার কমেছে। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপি ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন জিডিপি হচ্ছে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন বা হাফ এ ট্রিলিয়ন ডলার। জিডিপি ৬ গুণ বৃদ্ধি পেলে তো ক্লাসিফায়েড বা ব্যাড লোনের আকারও বৃদ্ধি পাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারসেন্টেজ কত, সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। ২০০৯ সালে ক্লাসিফায়েড লোন ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, আর এখন ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তখনকার তুলনায় কমেছে।
সিপিডির কেউ কেউ তো ২০০৭-২০০৮ সালে দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তখন ব্যাড লোন ১০ শতাংশের উপরে ছিল উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এইভাবে অসত্য এ সমস্ত তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিএনপির তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, তারা যে তিনদিন কর্মসূচি দিয়েছে, জনগণও জানে না, কেউ খেয়ালও করেনি। হয়তো বা সাংবাদিকরা খবরা-খবর রাখেন বলেই খেয়াল করেছেন। তারা কোন দিন হরতাল দেয়, কোন দিন অবরোধ দেয়, কেউ কিন্তু খেয়াল করে না। বাংলাদেশের মানুষও খেয়াল করেনি, কাকপক্ষীও খেয়াল করেছে কি না আমি জানি না। এগুলো গতানুগতিক কর্মসূচি এবং হাস্যকর।
Leave a Reply